
ওয়ার্ডপ্রেসে একটি পোস্ট লেখা (ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল – পর্ব ৫)
ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লক এডিটর ব্যবহার করে কীভাবে একটি পোস্ট লিখতে হয়, এখানে তা আলোচিত হয়েছে।
ওয়ার্ডপ্রেস এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় সিএমএস।
ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লক এডিটর ব্যবহার করে কীভাবে একটি পোস্ট লিখতে হয়, এখানে তা আলোচিত হয়েছে।
অটোমেটিক ইন্সটলার ব্যবহারে দোষের কিছু নেই, আবার ম্যানুয়ালি ইন্সটল করাটাও এমন কঠিন কিছুই না, আর এতে কিছু শেখারও সুযোগ আছে!...
আগের দুটো পর্বে আমরা লোকালহোস্ট এবং ওয়ার্ডপ্রেস.কম ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করা দেখেছি, যেগুলো অধিকাংশ সময়ে আদর্শ উপায় নয়। সত্যিকারের একটা ওয়ার্ডপ্রেস সাইট করতে হলে, যেখানে সে ধরণের কোন সীমাবদ্ধতা থাকবে না, আমাদের দরকার হবে নিজের একটি ডোমেইন ও হোস্টিং। প্রথমে ডোমেইনের কথায় আসি। ডোমেইন নামের ক্ষেত্রে বর্তমানে সহস্রাধিক এক্সটেনশন রয়েছে, দামেও রয়েছে তারতম্য। আপনি হয়ত খেয়াল করেছেন অধিকাংশ ওয়েবসাইট .com ডোমেইন ব্যবহার করে। আসলে এর একটা বিশেষ ফেস ভ্যালু গড়ে ওঠেছে। তবে ভালো একটি নামের .com ডোমেইন এভেইলেবল পাওয়াটা সাধারণত বেশ কঠিন, কেননা দেখা যায় আগেই অন্য কেউ তা কিনে রেখেছে, বিশেষ করে আকর্ষণীয় ডোমেইন নেম উচ্চমূল্যে বিক্রির বেশ বড় মার্কেট আছে। .com এর বিকল্প হিসেবে .net বেশ জনপ্রিয়, এছাড়া .io, .co এগুলো এখন চলছে অনেকক্ষেত্রে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে .xyz দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। .org ডোমেইনটি সাধারণত অর্গানাইজেশনগুলো ব্যবহার করে। বাংলাদেশ বেজড হলে .com.bd বা অন্য কোন .bd ডোমেইনও নেয়া যেতে পারে, তবে আমার অভিজ্ঞতা থেকে .বাংলা সাধারণভাবে না…
এর আগের আমরা দেখিয়েছি কীভাবে লোকালহোস্টে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। তবে সেটি শুধুমাত্র চর্চার জন্যই প্রযোজ্য, যদি সত্যিকারের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়, তাহলে আসলে লোকালহোস্ট ব্যবহার করা সমাধান নয়। একটা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরিতে সাধারণভাবে আমাদের ডোমেইন ও হোস্টিং প্রয়োজন, যা সাধারণত কিনে নিতে হয়। কিছু প্রোভাইডার বিনামূল্যে ডোমেইন বা হোস্টিং প্রোভাইড করে থাকে, তবে সেটা আসলে কোন কনভিনিয়েন্ট সমাধান হয় না সাধারণত, কেননা এই ফ্রি সার্ভিসগুলোতে প্রচুর লিমিটেশন থেকে থাকে। তবে আপনি যদি একটা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বিনামূল্যে করতে চান, সেক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস.কম-এর সেবা গ্রহণ করা একটা সমাধান হতে পারে, যদিও এখানেও যথেষ্ট লিমিটেশন আছে। এখানে একটা কনফিউশন পরিষ্কার করে নেয়া ভালো, তা হলো ওয়ার্ডপ্রেসের মূল ওয়েবসাইটটি হলো ওয়ার্ডপ্রেস.অর্গ (wordpress.org)। ওয়ার্ডপ্রেস.কম (wordpress.com) তাদের হোস্টিংয়ে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে, তবে এটা অফিসিয়ালি ওয়ার্ডপ্রেসের কোন প্রকল্প না বা সরাসরি সংযোগ নেই (যদিও পরোক্ষ কিছু সংযোগ আছে)। আরো জানতে এখানে দেখে নিতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেস.কম তাদের হোস্টিং ও সাবডোমেইনে একটি ওয়েবসাইট বিনামূল্যে করার সুযোগ দেয়।…
ওয়ার্ডপ্রেসের সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। কেতাবি ভাষায় বললে ওয়ার্ডপ্রেস একটি জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যাবহৃত কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস); যা পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল দ্বারা তৈরি। এটি জিপিএল এর অধীনে লাইসেন্সকৃত, অর্থাৎ এটি ওপেনসোর্স, কিছু শর্তাধীনে যে কেউ এটি মডিফিকেশন করতে পারে। বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে বিজনেস ওয়েবসাইট, ই-কমার্স ষ্টোর, ব্লগ, পোর্টফোলিও, সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন ফেরাম সহ বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ৪০ ভাগ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায় গড়ে আপনার ভিজিট করা প্রতি ৩ টি ওয়েবসাইট এর ১ টি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। আপনি এই লেখাটি যে ওয়েবসাইটে পড়ছেন সেই নিয়নবাতি ব্লগটিও ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। প্রশ্ন আসতেই পারে কেন ওয়ার্ডপ্রেস এত জনপ্রিয়। অনেকগুলো কারণ আছে, এটা ফ্রি, ব্যবহার করা সহজ, প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইট বানানো যায়, বিভিন্ন থিমস, প্লাগইনস প্রভৃতি এভেইলেবল, অনলাইনে প্রচুর টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় এবং আরো অনেক। কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াও আসলে ওয়ার্ডপ্রেসে অনেকক্ষেত্রেই খুব চমৎকার ওয়েবসাইট বানানো…
আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের জন্য আপনি যদি একটি চমৎকার থিমের খোঁজে থাকেন, তাহলে আমার মনে হয় ব্লকসি আপনার একবার অবশ্যই ট্রাই করে দেখা উচিৎ। এখন পর্যন্ত ফ্রি আর পেইড মিলিয়ে যতগুলো ওয়ার্ডপ্রেস থিম আমি দেখেছি বা ব্যবহার করেছি, তার মধ্যে এটাই এখন পর্যন্ত আমার সবচেয়ে পছন্দের থিম। প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইটের জন্য-ই ব্লকসি উপযুক্ত। সাধারণভাবে একটা থিম থেকে যত চাওয়া থাকতে পারে, দ্রুত লোডিং, ক্লিন কোড, রেসপোন্সিভ, ট্রান্সলেশন রেডি, ইজিলি কাস্টমাইজেবল, পেজ বিল্ডার সাপোর্ট, ই-কমার্স রেডি সবকিছুই ব্লকসি প্রোভাইড করে এবং ফ্রি ভার্সনেই তা রয়েছে। ব্লগসির সাথে ওয়ার্ডপ্রেসের গুটেনবার্গ বা ব্লক এডিটর ইন্টিগ্রেটেড। এখানে এলিমেন্টর, ব্রিজি, বিভার বিল্ডার, জিয়ন বিল্ডারের মত পেজ বিল্ডারগুলো চমৎকারভাবে কাজ করে। তাই বিজনেস, অ্যাপ হোমপেজ, চ্যারিটি প্রভৃতি ওয়েবসাইট এখানে বানানো সম্ভব। ই-কমার্স সাইট বানাতে চাইলে এর উকমার্স ফাংশনালিটি ও কাস্টমাইজেশন Astra বা OceanWP সহ জনপ্রিয় মাল্টিপারপোজ থিমগুলো থেকে অনেক বেটার আমার মতে। আবার যদি আপনি ব্লগ সাইট বানাতে চান, তাহলেও ব্লকসি একটা ভালো চয়েস। নিউজ সাইট…
আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, তারপরও কেউ কেউ হয়ত প্রশ্ন তুলতে পারে, তাই শুরুতেই একটি সংশয় নিরসন করে নিই, আর তা হলো ফেসবুকের মত বলতে আমি অবশ্যই ফেসবুক গ্রেড বা ফেসবুক কোয়ালিটি বোঝাচ্ছি না, কেননা সেরকম কিছু অবশ্যই একটা টিউটোরিয়াল দেখে ‘সহজেই’ ‘প্রায় বিনামূল্যে’ করে ফেলা সম্ভব না, আমি বোঝাতে চাচ্ছি এমন একটা সাইট যেখানে এখানে একটা টাইমলাইন থাকবে, কেউ চাইলে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে, পোস্ট করতে পারবে, লাইক-কমেন্ট-শেয়ার মেসেজ করতে পারবে এরকম। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন আমার নিজের একটি সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি করার প্রয়োজন হবে, যেখানে ফেসবুক, টুইটার, টেলিগ্রামসহ অনেক অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ইতোমধ্যেই আছে এবং তাদের হিউজ ইউজারবেসও রয়েছে। এর উত্তর হলো, খুব সম্ভবত আপনার এর কোন প্রয়োজন নেই। তবে হয়ত আপনি শেখার জন্য বানাতে চাইতে পারেন, অথবা এমন কিছু হয়ত আপনার প্রয়োজন থাকতে পারে যা অন্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সম্ভব না, যেমন হয়ত কোন প্রতিষ্ঠান বা কমিউনিটির জন্য এটা বিশেষায়িত করলেন বা শুধু নিজের বন্ধুদের মাঝে সীমিত রাখলেন বা এমন…