বিজ্ঞান

আঘাতপ্রাপ্ত অঙ্গ নতুন করে গজায় যে প্রাণীর!

মিলিমিটার স্কেলে যে প্রাণীর দৈর্ঘ্য মাপতে হয়, তার নাম কিনা ৯ মাথাওয়ালা গ্রীক মিথলজির সবচেয়ে বিখ্যাত প্রকান্ড দানবের নামে! হাইড্রার গল্পটা চমকপ্রদ এক রূপকথা, যেখানে গ্রীক মিথলজির অন্যতম শ্রেষ্ঠ বীর হারকিউলিস তাকে বধ করেছিলেন। গ্রীক মিথলজিতে তার নাম অবশ্য হেরাক্লিস, রোমান নাম হলো হারকিউলিস। হারকিউলিসের গল্পে রাজা ইউরেস্থিস তাকে খুব কঠিন ১২টা কাজ দিয়েছিলেন, নিমিয়ার দুষ্ট দানব সিংহকে বধের পর দ্বিতীয় কাজ ছিলো হাইড্রাকে বধ করা। হাইড্রাকে বধ করার গল্পটা রোমাঞ্চকর। হাইড্রাকে গ্রীক দেবী হীরা (Hḗrā) প্রতিপালন করেছিলেন শুধু হারকিউলিসকে বধ করার জন্য। দানব সিংহ থেকে হাইড্রাকে বধ করা ছিলো আরো কঠিন। আগের কাজটি একা করলেও এবার হারকিউলিস সাথে নেন বিশ্বস্ত ভাতিজা লোলাউসকে এবং বেরিয়ে পড়েন ঘোড়ার রথে চড়ে হাইড্রা লার্না লেকের পথে। হাইড্রার গভীর গুহা থেকে তাকে বের করতে জ্বলন্ত তীর ছুঁড়তে লাগেন হারকিউলিস। শেষবধি গগুহা থেকে বেরিয়ে এলে তার কাস্তে, মতান্তরে তলোয়াড় কিংবা বিখ্যাত গদা দিয়ে সম্মুখ সমরে মুখোমুখি হন। তবে হাইড্রাকে বধ করা সহজ ছিলো না, কেননা…

আরো পড়ুনআঘাতপ্রাপ্ত অঙ্গ নতুন করে গজায় যে প্রাণীর!

পানির ত্রৈধ বিন্দু: বরফ ও বাষ্প একই তাপমাত্রায় থাকে যেভাবে!

ত্রৈধ বিন্দুর ধারণাটা আমরা অনেকেই জানি। ত্রৈধ বিন্দুতে কোন পদার্থ একইসাথে বাষ্পীয়, তরল এবং কঠিন অবস্থায় বিরাজ করতে পারে। অর্থাৎ পানির ত্রৈধ বিন্দুতে একইসাথে তরল পানি, বরফ ও বাষ্প পাওয়া যাবে। বিষয়টা মজার, কারণ পানির স্ফুটনাঙ্ক, মানে কিনা যে তাপমাত্রায় পানি বাষ্পে পরিণত হয়, তার তাপমাত্রা হলো 100°C, অন্যদিকে হিমাঙ্ক তথা পানি জমে বরফ হওয়ার তাপমাত্রা হলো 0°C। তবে আরেকটু কথা আছে এখানে, তা হলো এই স্ফুটনাঙ্ক আর হিমাঙ্ক প্রমাণ চাপ, মানে ১ বায়ুমন্ডলীয় (1 atm) চাপ বা 101325 Pa (প্যাসকেল) চাপের জন্য হিসেব করা হয়। চাপ কম বা বেশি হওয়ার সাথে স্ফুটনাঙ্ক আর গলনাঙ্ক পরিবর্তন হয়ে থাকে। পানির কথাতে আসি, প্রমাণ চাপ থেকে চাপ যত কমতে থাকে পানির স্ফুটনাঙ্ক তার সাথে কমতে থাকে, অন্যদিকে হিমাঙ্ক বাড়তে থাকে। একটা চাপে এসে দেখা যায় স্ফুটনাঙ্ক আর হিমাঙ্কের তাপমাত্রা সমান হয়ে গেছে। চাপ বলতে পুরো সিস্টেমের মোট চাপ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো পানির আংশিক বাষ্পচাপ, খুব সহজ ভাষায় বললে বদ্ধ পরিবেশে পানির বাষ্প…

আরো পড়ুনপানির ত্রৈধ বিন্দু: বরফ ও বাষ্প একই তাপমাত্রায় থাকে যেভাবে!

কী ঘটে যখন 0°C এর সাথে 0°C যোগ করা হয়?

সিম্পল লজিক বলে 0°C যদি 32°F এর সমান হয়, তাহলে অবশ্যই 0°C + 0°C = 32°F + 32°F = 64°F হবে। কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, এখানে কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। কেননা সিম্পল লজিক এটাও বলে 0°C + 0°C = 0°C হয়, মানে কিনা 32°F। তাহলে সমস্যাটা আসলে কোথায় হচ্ছে? নিয়নবাতি টেলিগ্রাম গ্রুপ নিয়নবাতি টেলিগ্রাম চ্যানেল তাপমাত্রার যোগ বিয়োগের ব্যাপারটা একটু অন্যরকম। আপনি যদি দুটো ১০ কেজি ভরের বস্তু একত্র করেন, তাহলে মোট ভর ২০ কেজি হবে। তাপমাত্রার যোগ বিয়োগ আসলে ওভাবে করা যায় না, এটার মূলত কোন ফিজিকাল এক্সিস্টেন্স নেই। আমরা যদি যোগ করতেই চাই, তাহলে এটা নির্ভর করছে যোগ করাটাকে আমরা কী অর্থে নিচ্ছি তার ওপর। আচ্ছা, যদি আমি বলি 0°C + 0°C = 546.31°F? এমনকি যদি বলি 0°C + 0°C = 0°C, এটাও আসলে ঠিক নয়, বরং এটা হবে 273.15°C? অদ্ভুত লাগছে কি? তবে এটা আসলে যৌক্তিক একটা উত্তর, কারণ আপনাকে এটা বুঝতে হবে যে সেলসিয়াস স্কেল…

আরো পড়ুনকী ঘটে যখন 0°C এর সাথে 0°C যোগ করা হয়?

পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের মৌলিক পার্থক্য

আসসালামু আলাইকুম। আমি যখন প্রথমদিকে, অর্থাৎ অষ্টম বা নবম শ্রেণিতে রসায়ন আর পদার্থবিজ্ঞানের ব্যাপারগুলোর সাথে প্রাথমিকভাবে পরিচিত হই, তখন আমার জন্য একটু কনফিউজিং ছিলো, এদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যটা আসলে কোথায়। আর আমার বিশ্বাস এটা আরো অনেকের বেলাতেই হয়েছে। এটা নিয়ে একটা সহজ ধারণা দেয়ার চেষ্টা করি। বিজ্ঞান হলো পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জ্ঞানার্জনের নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। জগতের বিস্তৃত বিষয়ের আলোচনাকে সুশৃঙ্খল ও বিষয়ভিত্তিক রাখার জন্য বিজ্ঞান বিভিন্ন শাখা এবং গবেষণার অগ্রগতির সাথে আরো উপশাখায় বিন্যস্ত হতে থাকে। তবে এই বিন্যাস দুটো শাখার মধ্যে সম্পূর্ণ সূক্ষ্মভাবে পৃথক করে দাগ কেটে দেয়, এমন না। একই বিষয় একাধিক শাখায় আলোচ্য হতে পারে, এবং শাখাগুলোর পরস্পর নির্ভরশীলতা রয়েছে। বিজ্ঞানকে আমরা প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করি, যেমন প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান ও সাধারণ বিজ্ঞান। উইকিপিডিয়াতে এ নিয়ে আরো জানা যাবে। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান কাজ করে প্রাকৃতিক বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে। পদার্থবিজ্ঞান আর রসায়ন প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত এবং উভয়টি পদার্থ সংক্রান্ত আলোচনা করে। কিন্তু পদার্থের মধ্যেই বিষয়বস্তুতে ভিন্নতা আছে…

আরো পড়ুনপদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের মৌলিক পার্থক্য

রসায়নকে কেন ‘রসায়নবিজ্ঞান’ বলা হয় না?

পদার্থবিজ্ঞান বা জীববিজ্ঞানের সাথে ‘বিজ্ঞান’ শব্দটি যুক্ত করলেও রসায়নের বেলায় কিন্তু আমরা সচারচর তা করিনা। কেন করিনা, এটা কিন্তু একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়, আমিও কারণটা ভাবনায় পেয়েছিলাম, আমার ভাবনা ঠিক কিনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য গুগল (না, ডাক বা পিপীলিকা করিনি) করলাম। প্রথমে যে রেজাল্টগুলো পেলাম, তাতে অন্য একজনের ‘ভাবনায় পাওয়া’ আনুমানিক উত্তর দেয়া হয়েছে, যেটা ঠিক যথার্থ মনে হলো না। যাইহোক, পঞ্চম রেজাল্টে পাওয়া উত্তরটা আমার ভাবনার সাথে মিলেছে। এখানে অবশ্যই অন্য কারো লেখা কপি করা হয়নি, শুধু কনফার্ম হওয়ার জন্য দেখছিলাম। এখন চলুন একটু চিন্তা করি, পদার্থবিজ্ঞান আর জীববিজ্ঞানের সাথে ‘বিজ্ঞান’ যোগ না করলে কোন ক্ষতি ছিলো কিনা। আলবৎ ছিলো, কারণ পদার্থের সংজ্ঞা আমরা বাচ্চাকালেই পড়েছি, যার আকার আছে, আয়তন আছে, বল প্রয়োগে বাঁধা দান করে তা-ই পদার্থ, মানুষজন যতই তাকে অপদার্থ বলুক না কেন। জীবের সংজ্ঞাও সহজে দিতে পারি, যার জীবন আছে, তা-ই জীব। তাহলে কমপ্লেক্স বা কম্পাউন্ডে যাওয়ার কোন দরকার নেই, সিম্পলি পদার্থ আর জীব বললে…

আরো পড়ুনরসায়নকে কেন ‘রসায়নবিজ্ঞান’ বলা হয় না?

বাংলাদেশে কেন সচারচর ফ্যানে তিনটি পাখা (ব্লেড) থাকে? কিছু দেশে কেন চার বা পাঁচ পাখার প্রচলন বেশি?

তো, বাজারে কিছু কিছু চার বা পাঁচ পাখার ফ্যান পাওয়া যায়, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, আমাদের অধিকাংশ বাসাবাড়ি কিংবা অফিসে আমরা তিন ব্লেডের ফ্যান ব্যবহার করে থাকি। তবে একটা মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের দেশগুলো যেমন, ভারত, পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কা এবং আরো বিভিন্ন দেশে আপনি এমন দৃশ্য দেখলেও আমেরিকা বা কানাডার মত অনেক দেশে চার বা পাঁচ পাখার ফ্যানের প্রচলন অনেক বেশি। কেন এমনটা হয়, এটা নিয়েই এই লেখা। আসলে একটি ফ্যান থেকে কতটা বাতাস পাওয়া যাবে তা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন, ব্লেড কতটা হেলানো রয়েছে, আকৃতি কেমন বা কত গতিতে ঘুরছে প্রভৃতি। তো এখানে পাখার সংখ্যা কিন্তু একমাত্র নিয়ামক নয়। তবে পাখার সংখ্যার ওপরও কয়েকটি বিষয় নির্ভর করে। ফ্যানের কাজ কিন্তু এসির মত শীতল বাতাস তৈরি করা না, বরং ফ্যান বাতাসের প্রবাহ ঘটায়। পাখার সংখ্যা বেশি হলেই যে বাতাস বেশি হবে, এরকম কোন ব্যাপার নেই, বরং বেশি পাখার ক্ষেত্রে মোটরে অ্যারোডায়ানামিক টান বেশি হয়, তাই ফ্যানের গতি…

আরো পড়ুনবাংলাদেশে কেন সচারচর ফ্যানে তিনটি পাখা (ব্লেড) থাকে? কিছু দেশে কেন চার বা পাঁচ পাখার প্রচলন বেশি?

মহাবিশ্বের শীতলতম স্থান…

শীতের প্রকোপটা শুরুতে এবার একটু কমই ছিলো, ভালোই ভালোই শীতটা কেটে যাচ্ছে ভেবে যখন পুলকিত হচ্ছিলাম, তখনই আবার এত শীত পড়ছে যে ছোটন কাকুর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। ঠিক এই মুহুর্তে, আমি যখন লিখছি, তখন বগুড়ায় তাপমাত্রা দেখছি ১৫°C, আর এই তাপমাত্রায় কয়েক স্তরের সোয়েটার-হুডি-গ্লাভস-মোজা-মাফলার এমনকি নাক রক্ষার জন্য ডাবল মাস্ক পড়েও তীব্র শীঈইত বোধ করছি। সে যাই হোক, শীত হলো আসলে তাপের অনুপস্থিতি। শীতের একটা সীমা আছে, যার চেয়ে বেশি শীত হওয়া সম্ভব না। অর্থাৎ, কোথাও যদি তাপ একদমই না থাকে, সেখানে যে তাপমাত্রা হবে, তা হলো পরম শূন্য তাপমাত্রা, যা কেলভিন স্কেলে ০, সেলসিয়াস স্কেলে -২৭৩ ডিগ্রি। আমাদের মহাবিশ্বে অবশ্যি এরকম পরম শূন্য তাপমাত্রার স্থান এখনো পাওয়া যায়নি, তবে সর্বনিম্ন যে তাপমাত্রার স্থান এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, তার তাপমাত্রা এর থেকে মাত্র ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বুমেরাং নীহারিকা, পৃথিবী থেকে যার দূরত্ব ৫০০০ আলোকবর্ষ, এখানেই রেকর্ড হয়েছে এই তাপমাত্রা, -২৭২°C। নীহারিকা মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা মেঘের মত, যেখানে ধূলিকণা,…

আরো পড়ুনমহাবিশ্বের শীতলতম স্থান…

নিয়নবাতির আলো…

প্রায় ১২৩ বছর আগে ১৮৯৮ সালে দুজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম র‌্যামসে আর মরিস ট্রেভার্স নিয়ন আবিষ্কার করেন। নিয়ন একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস, যেটা বায়ুমন্ডলে খুব স্বল্প পরিমাণে পাওয়া যায়। বায়ুমন্ডল থেকে বিশুদ্ধ নিয়ন আলাদা করার পর বিজ্ঞানী দুজন একটি গেইস্লার টিউবে এর ধর্ম পরীক্ষা করছিলেন। গেইস্লার টিউব ১৮৫৭ সালে আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী হেনরিখ গেইস্লার। এই টিউবে আংশিক চাপশূন্যতায় বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহ করলে আলোর উৎপত্তি ঘটে। নিয়ন গ্যাসের ক্ষেত্রে যে আলো সৃষ্টি হয়, বিজ্ঞানী ট্রেভার্সের ভাষায়, টিউব থেকে জ্বলজ্বলে ক্রিমসন আলো তার গল্প বলছিলো, আর এটা মনে গেঁথে যাওয়ার মত একটা দৃশ্য ছিলো, যা কখনোই ভোলার নয়। এটা ছিলো নিয়নবাতির সূচনার গল্প। পর্যায় সারণির দশম মৌল নিয়ন নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলোর একটি। এর কক্ষপথগুলোতে ইলেকট্রন পূর্ণ থাকে, তাই সহজে অন্য পরমাণুর সাথে এটি বিক্রিয়া করে না, আর কোন ইলেকট্রন সরিয়ে নিতে দরকার হয় প্রচুর শক্তি। নিয়নবাতি তৈরির জন্য নিম্নচাপে অল্প পরিমাণ নিয়নকে কাচের টিউবে নেয়া হয়, যার দুপ্রান্তে ইলেকট্রোড থাকে। এরপর এর…

আরো পড়ুননিয়নবাতির আলো…

ক্রায়োনিক্স: একুশ শতকের মমি?

মমির কথা চিন্তা করলেই মনে আসে কত সহস্র বছর অতীতের মিশরের কথা। কেমন লাগবে যদি বলি একুশ শতকে এসেও এমন কিছু হচ্ছে যা যেন ঠিক মমিরই এক আধুনিক সংস্করণ? ক্রায়োনিক্সকে একুশ শতকের মমি বলাটা সম্ভবত ভুল হবে না, অথবা তার আধুনিক সংস্করণ। ক্রায়োনিক্স কী? ক্রায়োনিক্স এমন এক প্রযুক্তি যেখানে মৃত্যুর পর মানবদেহ কিংবা বিচ্ছিন্ন মস্তককে সংরক্ষণ করা হয় অতি নিম্ন তাপমাত্রায় এই আশার সাথে যে হয়ত ভবিষ্যতের প্রযুক্তিতে তাদের পুনরায় জীবিত করে তোলা সম্ভব হবে। একুশ শতকে এসে এমন কিছু, অদ্ভুত, সন্দেহ কী! এক্ষেত্রে −130° সেলসিয়াসের নিম্ন তাপমাত্রায়, সাধারণত -196° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তরল নাইট্রোজেনে মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়। এই অতি নিম্ন তাপমাত্রায় দেহের পঁচন ঘটে না, ফলে বহুদিন ধরে লাশ অবিকৃত থাকে। একে বলা হয় ক্রায়োসংরক্ষণ বা ক্রায়োপ্রিজারভেশন। ক্রায়োজেনিক সাসপেনশন মৃত মানুষকে জীবিত করে তোলা কিন্তু ক্রায়োনিক্সের মূল কথা না। এখানে উদ্দেশ্য হলো দেহ যে পর্যায়ে আছে সেভাবে স্থগিত রেখে দেওয়া। একারণে ক্রায়োপ্রিজাভেশনের পরিবর্তে অনেক সময় ক্রায়োজেনিক সাসপেনশন (স্থগিত) টার্মটি…

আরো পড়ুনক্রায়োনিক্স: একুশ শতকের মমি?

প্লুটো ছিলো সৌরজগতের অষ্টম গ্রহ, জানেন কি?

এখন তো প্লুটোকে আর গ্রহের মধ্যেই ধরা হয় না, তবে আমরা সবাই জানি একটা সময়ে প্লুটো ছিলো সৌরজগতের স্বীকৃত নবম গ্রহ। কিন্তু আমি যদি বলি আসলে এটা একসময়ে, এমনকি দু’যুগ আগেও ছিলো সৌরজগতের অষ্টম গ্রহ এবং নেপচুনের অবস্থান ছিলো নবম? আর হ্যা, এটা কিন্তু সত্যিই! যদিও বিতর্ক চলছে এবং হয়ত আরো সময় ধরে চলবে, তবে এখন প্লুটোকে বামন গ্রহ বা Dwarf Planet হিসেবে ধরা হয়। আকারে এটা আমাদের পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদের থেকেও ছোট, চাঁদের ১,৭৩৭.১ কিমি ব্যাসার্ধের বিপরীতে প্লুটোর ব্যাসার্ধ মাত্র ১,১৮৮.৩ কিমি। প্লুটো পৃথিবীর হিসেবে প্রায় ২৪৮ বছরে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে থাকে, কক্ষপথটাও একটু আলাদা ধরণের। সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষপথগুলো অনেকটা একই সমতলে অবস্থান করে, যার নাম হলো ক্রাঁতিবৃত্ত বা ক্রান্তিবৃত্ত বা অয়নবৃত্ত বা সৌরবৃত্ত, ইংরেজিতে ecliptic। কিন্তু প্লুটোর কক্ষপথ এর থেকে ১৭ ডিগ্রি কোণের বেশি আনত থাকে। নিচের এনিমেশনে দেখা যাচ্ছে প্লুটোর কক্ষপথ গ্রহগুলো থেকে আলাদা ধরণের। প্লুটো কখনো কখনো নেপচুনের কক্ষপথে অতিক্রম করে ফেলে। নিচের ভিজুয়ালাইজেশনে ১৯০০…

আরো পড়ুনপ্লুটো ছিলো সৌরজগতের অষ্টম গ্রহ, জানেন কি?

শূন্যস্থানে আলোর বেগ ধ্রুব, কিন্তু কীভাবে?

আপেক্ষিকতার তত্ত্বের দ্বিতীয় মৌলিক স্বীকার্য অনুযায়ী, শূন্যস্থানে আলোর বেগ ধ্রুব। প্রসঙ্গ কাঠামো স্থির থাকুক কিংবা যেকোন গতিতে চলমান, এর সাপেক্ষে শূন্যস্থানে আলোর বেগ অবশ্যই ধ্রুব হবে। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? চলুন, এই চমৎকার প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা যাক। তার আগে বলে নিই, এটা একটা খুব সরলীকৃত ব্যাখ্যা, শুধু বোঝার জন্য। একটু অতীত থেকে শুরু করি। আমরা এখন জানি, আলোর বেগ 3*108 m/s, আরো সূক্ষ্মভাবে বললে 299,792,458 m/s। কিন্তু, একসময় এটা মানুষ জানতো না, এমনকি এটাও জানতো না যে, আলোর বেগ বলে কিছু একটা আছে। মনে করা হত, আলো প্রজ্জ্বলিত হওয়ার সাথে সাথেই যেকোন দূরত্ব থেকে দেখা যাবে। কিন্তু এই ধারণাটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ছুঁড়ে দিয়ে, আলোর বেগ আছে কিনা, এটা নিয়ে প্রথম পরীক্ষা করেন ডাচ বিজ্ঞানী আইজ্যাক ব্যাকমেন। ক্যালেন্ডারে তখন ১৬২৯ সাল চলছে। তিনি দেখতে চাইলেন, বিভিন্ন দূরত্বে আলোর দৃশ্যমানের সময়ের কোন পার্থক্য পাওয়া যায় কিনা। এজন্য এক সারি আয়না সাজিয়ে গানপাউডারে বিস্ফোরন পর্যবেক্ষণ করলেন। তবে, দুঃখজনকভাবে, এই পরীক্ষাতে এর উত্তর…

আরো পড়ুনশূন্যস্থানে আলোর বেগ ধ্রুব, কিন্তু কীভাবে?

বিজ্ঞান কি ইসলামের প্রতিপক্ষ?

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু। অজ্ঞতাবশত অনেকের মধ্যে ধারণা প্রচলিত আছে, বিজ্ঞান ও ধর্ম বিপরীতধর্মী কথা বলবে, দুটো একসাথে চলতে পারে না। এ থেকে কেউ কেউ বিজ্ঞান ও ধর্মকে প্রতিপক্ষরূপে উপস্থাপন করে। অর্থাৎ, বিজ্ঞান ও ধর্মের একটা বেছে নিতে হবে। ইসলাম নিয়েও কারো ধারণা এমনটাই। কিছুটা ইসলাম চর্চা করেন, এমন অনেকের মধ্যেও ধারণা দেখা যায়, বিজ্ঞান বিজ্ঞানের স্থানে, ইসলাম ইসলামের স্থানে। বিজ্ঞান ও ইসলামকে মিক্স আপ করা যাবে না। দুটো আলাদাভাবে থাকবে। ব্যক্তিজীবনে একজন সালাত, সাওম এরকম ইবাদত পালন করতে পারে, কিন্তু বিজ্ঞানের কোন কথা ইসলামের মাধ্যমে যাচাই করা যাবে না। অনেক বিষয়ে বাস্তবিক ভাবেই ইসলাম ও বিজ্ঞান কিছুটা ভিন্ন কথা বলে। তাহলে, এখানে আমাদের মনোভাব কেমন হওয়া উচিৎ? ইসলাম: একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ধর্ম বলতে আমরা অনেকে একজন ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া, তার উপাসনা ও আনুসঙ্গিক কিছু আনুষ্ঠানিকতা অনেকটা এরকম বুঝে থাকি। কোন কোন ধর্মের ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞা প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু ইসলাম এর চেয়ে বেশি কিছু। ইসলাম ব্যাপারটার…

আরো পড়ুনবিজ্ঞান কি ইসলামের প্রতিপক্ষ?

মহাবিশ্বের বিশালতা: আপনার কল্পনার চেয়ে অনেক বেশি

রাতের ওই আকাশের জ্বলজ্বলে একেকটা তারা নাকি আমাদের সূর্যের মতই, আর প্রায়ই, আমাদের সূর্যের চেয়ে আরো অনেক অনেক বড় সব আগুনের গোলা, নিস্তদ্ধ রাতের শান্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে হঠাৎই মন এক অসীম শূন্যতায় হারিয়ে যায়, হঠাৎই মনে হয়, ক্ষুদ্র, বড় ক্ষুদ্র আমরা। মহাবিশ্বের অসীমতার বুকে এক বিন্দুও কি বলা চলে? ভাবনাগুলো হঠাৎই এলোমেলো হয়ে যায়, মন দূরের ওই তারার দেশে হারিয়ে যায়। আমাদের পৃথিবী, আমাদের বাসস্থান। আমি, আপনি, আমাদের সবার ঠিকানা। একে ঘিরে আমাদের স্বপ্ন, আমাদের ভাবনা, আমাদের চাওয়া, আমাদের হতাশা। একান্নো কোটি বর্গ কিলোমিটার, শুনতে মনে হয় অনেক, অনেক। হ্যাঁ, আমাদের পৃথিবীটা ছোট্ট নয়, ক্ষুদ্র আমাদের তুলনায় অনেকটা বড়। কিন্তু, যখন আরেকটু বড় করে ভাবি? আমাদের সসীম মস্তিষ্কের অসীম কথাটার তাৎপর্য বোঝা কতটা সম্ভব, তা বলা কঠিন, তবে ইউনিভার্সকে আপনি যতটা সম্ভবত বড় ভাবছেন, বা যতটা বড় জানেন, তার চেয়ে তা অনেক অনেক অনেক বড়! চাঁদ, ইউনিভার্সে আমাদের সবচেয়ে কাছের সঙ্গী। কত দূরে সে? যতটা কাছের মনে হচ্ছে, ততটাও…

আরো পড়ুনমহাবিশ্বের বিশালতা: আপনার কল্পনার চেয়ে অনেক বেশি
নতুন মৌল পর্যায় সারণি

১১৯ তম মৌল কি সম্ভব? মৌলের শেষ কোথায়?

বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্ডেলিফ যখন পারমাণবিক ভরের (বর্তমানে পারমাণবিক সংখ্যা) ভিত্তিতে তার পর্যায় সারণিটি তৈরি করেছিলেন, তখন সেখানে সবচেয়ে ভারি মৌলটি ছিলো ইউরেনিয়াম (₉₂U)। তবে তার পর্যায় সারণিতে মোট মৌল ছিলো ৬৩টি, কেননা, এর বেশি মৌলের আবিষ্কারের কথা তখনও জানা যায়নি। তবে তিনি এটা জানতেন যে পর্যায় সারণিতে এমন কিছু স্থান আছে, যেখানে নতুন মৌলের অস্তিত্ব সম্ভব, ফলে তার পর্যায় সারণিতে কিছু শূন্যস্থান ছিলো। পরবর্তীতে এই শূন্যস্থানগুলো পূরণ হয়েছে এবং ৯২ ছাড়িয়ে আরো ২৬টি নতুন মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে। এমনই একটি শূন্যস্থান ছিলো ৪৩ তম মৌলের স্থানে। বর্তমানে এর নাম টেকনেশিয়াম (₄₃TC)। ১৯৩৭ সালে টেকনিশিয়াম নিশ্চিতভাবে আবিষ্কৃত হয় এবং পর্যায় সারণির একটি শূন্যস্থান পূরণ হয়। এটিই ছিলো প্রথম কৃত্রিম বা সিনথেটিক মৌল, যা মানুষ আবিষ্কার করে। বাস্তবে প্রকৃতিতে এর কোন স্থায়ী আইসোটোপ নেই। তবে আবিষ্কারের পরবর্তী সময়ে এর চিহ্ন প্রকৃতিতে পাওয়া গেছে। সাধারণভাবে প্রথম ৯২টি মৌলকে প্রাকৃতিক বিবেচনা করা হয়, যদিও তার মধ্যে কয়েকটির স্থায়ী আইসোটোপ নেই, কয়েকটি ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের তেজষ্ক্রিয়…

আরো পড়ুন১১৯ তম মৌল কি সম্ভব? মৌলের শেষ কোথায়?