পদার্থবিজ্ঞান

পানির ত্রৈধ বিন্দু: বরফ ও বাষ্প একই তাপমাত্রায় থাকে যেভাবে!

ত্রৈধ বিন্দুর ধারণাটা আমরা অনেকেই জানি। ত্রৈধ বিন্দুতে কোন পদার্থ একইসাথে বাষ্পীয়, তরল এবং কঠিন অবস্থায় বিরাজ করতে পারে। অর্থাৎ পানির ত্রৈধ বিন্দুতে একইসাথে তরল পানি, বরফ ও বাষ্প পাওয়া যাবে। বিষয়টা মজার, কারণ পানির স্ফুটনাঙ্ক, মানে কিনা যে তাপমাত্রায় পানি বাষ্পে পরিণত হয়, তার তাপমাত্রা হলো 100°C, অন্যদিকে হিমাঙ্ক তথা পানি জমে বরফ হওয়ার তাপমাত্রা হলো 0°C। তবে আরেকটু কথা আছে এখানে, তা হলো এই স্ফুটনাঙ্ক আর হিমাঙ্ক প্রমাণ চাপ, মানে ১ বায়ুমন্ডলীয় (1 atm) চাপ বা 101325 Pa (প্যাসকেল) চাপের জন্য হিসেব করা হয়। চাপ কম বা বেশি হওয়ার সাথে স্ফুটনাঙ্ক আর গলনাঙ্ক পরিবর্তন হয়ে থাকে। পানির কথাতে আসি, প্রমাণ চাপ থেকে চাপ যত কমতে থাকে পানির স্ফুটনাঙ্ক তার সাথে কমতে থাকে, অন্যদিকে হিমাঙ্ক বাড়তে থাকে। একটা চাপে এসে দেখা যায় স্ফুটনাঙ্ক আর হিমাঙ্কের তাপমাত্রা সমান হয়ে গেছে। চাপ বলতে পুরো সিস্টেমের মোট চাপ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো পানির আংশিক বাষ্পচাপ, খুব সহজ ভাষায় বললে বদ্ধ পরিবেশে পানির বাষ্প…

আরো পড়ুনপানির ত্রৈধ বিন্দু: বরফ ও বাষ্প একই তাপমাত্রায় থাকে যেভাবে!

কী ঘটে যখন 0°C এর সাথে 0°C যোগ করা হয়?

সিম্পল লজিক বলে 0°C যদি 32°F এর সমান হয়, তাহলে অবশ্যই 0°C + 0°C = 32°F + 32°F = 64°F হবে। কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, এখানে কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। কেননা সিম্পল লজিক এটাও বলে 0°C + 0°C = 0°C হয়, মানে কিনা 32°F। তাহলে সমস্যাটা আসলে কোথায় হচ্ছে? নিয়নবাতি টেলিগ্রাম গ্রুপ নিয়নবাতি টেলিগ্রাম চ্যানেল তাপমাত্রার যোগ বিয়োগের ব্যাপারটা একটু অন্যরকম। আপনি যদি দুটো ১০ কেজি ভরের বস্তু একত্র করেন, তাহলে মোট ভর ২০ কেজি হবে। তাপমাত্রার যোগ বিয়োগ আসলে ওভাবে করা যায় না, এটার মূলত কোন ফিজিকাল এক্সিস্টেন্স নেই। আমরা যদি যোগ করতেই চাই, তাহলে এটা নির্ভর করছে যোগ করাটাকে আমরা কী অর্থে নিচ্ছি তার ওপর। আচ্ছা, যদি আমি বলি 0°C + 0°C = 546.31°F? এমনকি যদি বলি 0°C + 0°C = 0°C, এটাও আসলে ঠিক নয়, বরং এটা হবে 273.15°C? অদ্ভুত লাগছে কি? তবে এটা আসলে যৌক্তিক একটা উত্তর, কারণ আপনাকে এটা বুঝতে হবে যে সেলসিয়াস স্কেল…

আরো পড়ুনকী ঘটে যখন 0°C এর সাথে 0°C যোগ করা হয়?

পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের মৌলিক পার্থক্য

আসসালামু আলাইকুম। আমি যখন প্রথমদিকে, অর্থাৎ অষ্টম বা নবম শ্রেণিতে রসায়ন আর পদার্থবিজ্ঞানের ব্যাপারগুলোর সাথে প্রাথমিকভাবে পরিচিত হই, তখন আমার জন্য একটু কনফিউজিং ছিলো, এদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যটা আসলে কোথায়। আর আমার বিশ্বাস এটা আরো অনেকের বেলাতেই হয়েছে। এটা নিয়ে একটা সহজ ধারণা দেয়ার চেষ্টা করি। বিজ্ঞান হলো পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জ্ঞানার্জনের নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। জগতের বিস্তৃত বিষয়ের আলোচনাকে সুশৃঙ্খল ও বিষয়ভিত্তিক রাখার জন্য বিজ্ঞান বিভিন্ন শাখা এবং গবেষণার অগ্রগতির সাথে আরো উপশাখায় বিন্যস্ত হতে থাকে। তবে এই বিন্যাস দুটো শাখার মধ্যে সম্পূর্ণ সূক্ষ্মভাবে পৃথক করে দাগ কেটে দেয়, এমন না। একই বিষয় একাধিক শাখায় আলোচ্য হতে পারে, এবং শাখাগুলোর পরস্পর নির্ভরশীলতা রয়েছে। বিজ্ঞানকে আমরা প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করি, যেমন প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান ও সাধারণ বিজ্ঞান। উইকিপিডিয়াতে এ নিয়ে আরো জানা যাবে। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান কাজ করে প্রাকৃতিক বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে। পদার্থবিজ্ঞান আর রসায়ন প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত এবং উভয়টি পদার্থ সংক্রান্ত আলোচনা করে। কিন্তু পদার্থের মধ্যেই বিষয়বস্তুতে ভিন্নতা আছে…

আরো পড়ুনপদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের মৌলিক পার্থক্য

বাংলাদেশে কেন সচারচর ফ্যানে তিনটি পাখা (ব্লেড) থাকে? কিছু দেশে কেন চার বা পাঁচ পাখার প্রচলন বেশি?

তো, বাজারে কিছু কিছু চার বা পাঁচ পাখার ফ্যান পাওয়া যায়, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, আমাদের অধিকাংশ বাসাবাড়ি কিংবা অফিসে আমরা তিন ব্লেডের ফ্যান ব্যবহার করে থাকি। তবে একটা মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের দেশগুলো যেমন, ভারত, পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কা এবং আরো বিভিন্ন দেশে আপনি এমন দৃশ্য দেখলেও আমেরিকা বা কানাডার মত অনেক দেশে চার বা পাঁচ পাখার ফ্যানের প্রচলন অনেক বেশি। কেন এমনটা হয়, এটা নিয়েই এই লেখা। আসলে একটি ফ্যান থেকে কতটা বাতাস পাওয়া যাবে তা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন, ব্লেড কতটা হেলানো রয়েছে, আকৃতি কেমন বা কত গতিতে ঘুরছে প্রভৃতি। তো এখানে পাখার সংখ্যা কিন্তু একমাত্র নিয়ামক নয়। তবে পাখার সংখ্যার ওপরও কয়েকটি বিষয় নির্ভর করে। ফ্যানের কাজ কিন্তু এসির মত শীতল বাতাস তৈরি করা না, বরং ফ্যান বাতাসের প্রবাহ ঘটায়। পাখার সংখ্যা বেশি হলেই যে বাতাস বেশি হবে, এরকম কোন ব্যাপার নেই, বরং বেশি পাখার ক্ষেত্রে মোটরে অ্যারোডায়ানামিক টান বেশি হয়, তাই ফ্যানের গতি…

আরো পড়ুনবাংলাদেশে কেন সচারচর ফ্যানে তিনটি পাখা (ব্লেড) থাকে? কিছু দেশে কেন চার বা পাঁচ পাখার প্রচলন বেশি?

শূন্যস্থানে আলোর বেগ ধ্রুব, কিন্তু কীভাবে?

আপেক্ষিকতার তত্ত্বের দ্বিতীয় মৌলিক স্বীকার্য অনুযায়ী, শূন্যস্থানে আলোর বেগ ধ্রুব। প্রসঙ্গ কাঠামো স্থির থাকুক কিংবা যেকোন গতিতে চলমান, এর সাপেক্ষে শূন্যস্থানে আলোর বেগ অবশ্যই ধ্রুব হবে। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? চলুন, এই চমৎকার প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা যাক। তার আগে বলে নিই, এটা একটা খুব সরলীকৃত ব্যাখ্যা, শুধু বোঝার জন্য। একটু অতীত থেকে শুরু করি। আমরা এখন জানি, আলোর বেগ 3*108 m/s, আরো সূক্ষ্মভাবে বললে 299,792,458 m/s। কিন্তু, একসময় এটা মানুষ জানতো না, এমনকি এটাও জানতো না যে, আলোর বেগ বলে কিছু একটা আছে। মনে করা হত, আলো প্রজ্জ্বলিত হওয়ার সাথে সাথেই যেকোন দূরত্ব থেকে দেখা যাবে। কিন্তু এই ধারণাটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ছুঁড়ে দিয়ে, আলোর বেগ আছে কিনা, এটা নিয়ে প্রথম পরীক্ষা করেন ডাচ বিজ্ঞানী আইজ্যাক ব্যাকমেন। ক্যালেন্ডারে তখন ১৬২৯ সাল চলছে। তিনি দেখতে চাইলেন, বিভিন্ন দূরত্বে আলোর দৃশ্যমানের সময়ের কোন পার্থক্য পাওয়া যায় কিনা। এজন্য এক সারি আয়না সাজিয়ে গানপাউডারে বিস্ফোরন পর্যবেক্ষণ করলেন। তবে, দুঃখজনকভাবে, এই পরীক্ষাতে এর উত্তর…

আরো পড়ুনশূন্যস্থানে আলোর বেগ ধ্রুব, কিন্তু কীভাবে?