খবরটা আসলে একটু পুরনো, ফিডোরা ৩৮ রিলিজ হয়েছে আরো কয়েকদিন আগেই, ১৭ এপ্রিল। ফিডোরা একটি জনপ্রিয় লিনাক্সভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম। লিনাক্স নিয়ে আরো জানতে চাইলে দেখুন ৮০০০ শব্দে লিনাক্স পরিচিতি।
ফিডোরা নিয়ে আমার আগের এক্সপ্রেরিয়েন্স তত ভালো ছিলো না। তবে তার কারণ ছিলো সুনির্দিষ্ট কিছু সমস্যা, যেগুলো সমাধান হলে ফিডোরার বাদবাকি সব দারুণ লাগছিলো। যেমন সবচেয়ে মেজর ছিলো ফিডোরা ২৯-এ গ্নোম শেলে মাঝেমাঝেই কার্সর অদৃশ্য হয়ে যেতো, আর ফিডোরা ৩৫-এ ভিডিও কলে স্ক্রিন শেয়ার করতে পারছিলাম না।
তবে গত দু-তিন মাস আবারো ফিডোরা ব্যবহার করছি-ফিডোরা ৩৭ ব্যবহার করছিলাম এতদিন অবশ্যই, সম্প্রতি ফিডোরা ৩৮-এ আপগ্রেড করেছি। এই সময়ের মধ্যে আগের সমস্যাগুলোসহ মেজর কোন সমস্যা পাইনি। তবে একটি সমস্যা- টেলিগ্রাম ডেস্কটপ অ্যাপ প্রায়ই ক্র্যাশ করার প্রবণতা আছে, যা ফিডোরা ৩৫, ৩৭ ও ৩৮ তিনটি ভার্সনেই এক্সপ্রেরিয়েন্স করেছি। এছাড়া সেটিংস অ্যাপ ও ফাইল ম্যানেজার অন্তত একবার করে ক্র্যাশ করেছে গত দু-তিনদিনের ব্যবহারে।
ফিডোরা ৩৮ একটি কোয়ালিটি অফ লাইফ আপগ্রেড- ফিডোরা ৩৭ থেকে এক্সপ্রেরিয়েন্সে উল্লেখযোগ্য তারতম্য নেই, তবে সামগ্রিকভাবে একটি বেটার সংস্করণ। এখানে থাকছে লেটেস্ট লিনাক্স কার্নেল ৬.২ এবং ওয়ার্কস্টেশন এডিশনে ডেস্কটপ হিসেবে থাকছে লেটেস্ট গ্নোম ৪৪।
গ্নোম ৪৪-এ গ্নোমের সাম্প্রতিক ধারা অব্যহত রেখে আরো উন্নত করা হয়েছে। কুইক সেটিংস, সেটিংস অ্যাপ, ফাইল ম্যানেজারসহ বিভিন্ন কোর অ্যাপস ও আরো বেশ কিছু জায়গায় এখানে ইম্প্রুভমেন্ট থাকছে। গ্নোম ৪৩-এ ইন্ট্রিডিউস করা কুইক সেটিংসে কিছু রিফাইনমেন্ট এসেছে, ব্লুটুথ ডিভাইস এখন কুইক সেটিংস থেকে সরাসরি সিলেক্ট করা যায়। ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস সেকশন নতুন যুক্ত হয়েছে কুইক সেটিংসে, তবে ট্র্যাডিশনাল ট্রে আইকনসের বিপরীতে তা সেরকম ফাংশনাল না। ফাইল ম্যানেজারে লিস্ট ভিউয়ের ক্ষেত্রে এক্সপেন্ডেবল ফোল্ডার অপশনটি যুক্ত করা হয়েছে।
ফিডোরার ফ্ল্যাগশিপ ডেস্কটপ গ্নোম, তবে পাশাপাশি ফিডোরা স্পিনস হিসেবে তারা অল্টারনেটিভ কিছু ডেস্কটপ ও উইন্ডো ম্যানেজার অফার করে। ফিডোরা ৩৮ রিলিজের সাথে নতুন দুটি স্পিনস যুক্ত হয়েছে এই সে তালিকায়, Budgie ডেস্কটপ ও Sway টাইলিং কম্পোজিটর। আর ফিডোরার ওয়েবসাইটও রিডিজাইন করা হয়েছে নতুন রিলিজের সাথে।
অ্যাপস সাপোর্টের ক্ষেত্রে ফিডোরা আগে থেকেই ফ্লাটপ্যাক সাপোর্ট প্রি-ইনক্লুডেড ছিলো। আগের ভার্সনগুলোতে থার্ড পার্টি রিপোজিটরী এনাবল করলে ফ্ল্যাটহাবের সিলেক্টেড সেকশন একসেস পাওয়া যেত। তবে ফিডোরা ৩৮ থেকে থার্ড পার্টি রিপোজিটরী এনাবল করলে সরাসরি ফ্ল্যাটহাবের সব অ্যাপসে একসেস পাওয়া যাবে, আলাদাভাবে রিপোজিটরীটি যুক্ত করার দরকার হবে না।
আন্ডার দ্য হুড কিছু ইম্প্রুভমেন্ট থাকছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কোন কোন সিস্টেম সার্ভিস শাট ডাউনে ডিলে করলে তার টাইম আউট ১:৩০ মিনিট থেকে কমিয়ে ১৫ সেকেন্ড করা হয়েছে। ফলে এখন পাওয়ার অফের সময় এরকম পরিস্থিতিতে আগের থেকে অনেক দ্রুত কম্পিউটার বন্ধ হবে।
আরো দেখুন:
ফিডোরা ৩৮ অ্যানাউন্সমেন্ট (Fedora Magazine)
ফিডোরা ৩৮ এর নতুন ফিচার্স (Fedora Magazine)
গ্নোম ৪৪ এর নতুন ফিচার্স (OMG! LINUX)
ফিডোরা ৩৮ রিভিউ (Learn Linux TV)