25 views

রসিকতা হোক সীমার মাঝে
মানুষের জীবনে আনন্দ ও বিনোদনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু জীবনটাকেই যদি বিনোদন বানিয়ে নেয়া হয়, যদি সবকিছুকে খেলতামাশা করে নেয়া হয়, তবে তা প্রশংসনীয় নয়। এই সময়ে প্রাঙ্ক, ট্রল ও মিম প্রভৃতি সংস্কৃতি যে রূপ ধারণ করছে- তা অনেক ক্ষেত্রেই বলা যায় সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
রসিকতা বা হাসি-ঠাট্টার বিষয়টিকে কিছুটা লবণের সাথে তুলনা করা যায়। এর অনুপস্থিতি যখন খাবারকে বিস্বাদ করে তুলে, বিপরীতে এর আধিক্য খাবারকে করে তুলে খাবার অনুপোযুক্ত। হাসি-ঠাট্টা তখনই প্রশংসনীয় যতক্ষণ তা পরিমিত মাত্রার মধ্যে থাকছে।
বিশেষ করে এখন তো এমন একটা অবস্থা হয়েছে- দুর্ঘটনা, মৃত্যু, বিপদ-আপদ কোনকিছুকেই আমরা রসিকতার হাত থেকে ছাড় দিচ্ছি না- নিঃসন্দেহে এটা নিন্দনীয়। যখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকেও তামাশা বানিয়ে নেয়া হয়, দরকারী সময়গুলোতেও সিরিয়াসনেস না দেখানো হয়- তা অন্যদের কাছে মানুষের গুরুত্ব কমিয়ে দেয়।
মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলা নিয়ে হাদিসে খুব শক্ত কথা বলা হয়েছে (মিথ্যা বলা বলতে গল্প বা ফিকশন উদ্দেশ্য নয়)। কারো বিষয়ে গীবত করা, কাউকে অন্যায়ভাবে অপদস্থ করা, আঘাত বা হয়রানি করা, বা আতঙ্ক সৃষ্টি করা প্রভৃতি শুধু ঠাট্টার নামে করলেই তা কখনো গ্রহণযোগ্য হয় না- এই বিষয়গুলো খুবই ভয়াবহ, বিশেষ করে যখন তা হালকাভাবে নেয়া হয়। কখনোই এগুলো মজার বিষয় নয়।
আরেকটি আশঙ্কাজনক বিষয় হলো যখন ইসলামের কোন বিষয় বা বিধি-বিধানকে তামাশা বানিয়ে ফেলা হয়। এই চর্চা এখন প্রায়সই দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো কুফরের পর্যায় পর্যন্ত চলে যেতে পারে- এখানে খুবই সতর্কতা কাম্য।
সীমার মধ্যে রসিকতা মন্দ কিছু নয়, তবে আমাদের সবকিছু ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া উচিৎ। এখানে যেন সীমালঙ্ঘন না হয়, অন্যের ক্ষতি করা না হয়, মানুষের বিরক্তির উদ্রেক না করা হয় তা দেখতে হবে। আনন্দ করতে গিয়ে যেন তা কারো জন্য কষ্টকর না হয়ে যায়। যে বিষয়গুলো মজার নয়, মজার নামে যেন তা না করা হয়।
সবকিছুর মতই ইসলামে কৌতুক ও হাসি-ঠাট্টা নিয়েও নির্দেশনা আছে। এ বিষয়ে ইসলামের সীমারেখা বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন: IslamQA