বড় ধরণের ডাউনগ্রেড আসলো ফায়ারফক্সের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনে

অ্যান্ড্রয়েডে ফায়ারফক্স এমনিতেও বেশি জনপ্রিয় নয় সঙ্গত কারণেই। ক্রোমসহ অন্যান্য জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ব্রাউজারগুলো চালিয়ে ফায়ারফক্সে আসলেই কারণটা বোঝা যায়। ইন্টারফেসটা মোটেও ঠিক ২০২০ এর মত লাগতো না এতদিন, কোন জেসচার নেই, কেমন একটা ওল্ড ভাব। কিন্তু তারপরও এতদিন পর্যন্ত নিয়মিত ফায়ারফক্স ব্যবহার করে আসছিলাম। ফায়ারফক্সের হোমপেজ, এড-অনস ফাংশনালিটিসহ ছোট ছোট কিছু বিষয় ফায়ারফক্সের অভিজ্ঞতাকে অন্য ব্রাউজার থেকে আলাদা করে রাখতো।

কিন্তু সম্প্রতি একটা বড় রকম ডাউনগ্রেড আনা হয়েছে ফায়ারফক্সে এবং আমি এখন ফায়ারফক্স ব্যবহারের কোন কারণ-ই খুঁজে পাচ্ছি না। আমি দুঃখিত যে Firefox 79.0.5 ভার্সনটিকে কোন আপগ্রেড বলতে পারছি না, এটা একটা হিউজ ডাউনগ্রেড, হিউজ মানে হিউজ। যদিও অন্য কোন ব্রাউজারে সুইচ করার ইচ্ছা ছিলো না, তবে মনে হচ্ছে হয়ত অদূর ভবিষ্যতে করতে হতেও পারে। কেননা ফায়ারফক্স ব্যবহার করার যে কারণগুলো ছিলো, সেগুলো সুন্দরভাবে উধাও হয়ে গেছে নতুন ভার্সনে।

ভালো দিকের কথা বললে এটা তো বলতে হচ্ছে যে নতুন ইউআই অনেক সুন্দর এবং মডার্ন, ডার্ক মোড যুক্ত হয়েছে। তার সাথে এটাও বলতে হচ্ছে এটা আগের চেয়ে আরো কম ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং ফায়ারফক্সের কোন ফিল-ই আসে না। আর ইন্টারফেস দেখে যতই স্মার্ট লাগুক, এখানে কোন জেসচার নেই, কাস্টমাইজেবিলিটি খুবই কম (তবে ডার্ক মোড আছে), ইউজ করতে গেলে আসলে নতুন এই ফায়ারফক্স একদমই মডার্ন ব্রাউজারের ফিল দেয় না।

প্রথমেই হোমপেজ নিয়ে বলি। আগে হোমপেজে তিনটি ট্যাব ছিলো, টপ সাইট, হিস্টরী, বুকমার্কস। আর এখন উপরের ছবিতে যেমনটা দেখছেন তেমনটা। আগে যেকোন ওয়েবপেজ থেকে ইউআরএল টাইপের অপশনে গেলেও হোমপেজের মত টপ সাইট, হিস্টরী, বুকমার্কস একসেস করা যেত। আর এখন নিচের ছবিতে যেমনটা দেখছেন তেমনটা।

আগের ভার্সনে ডেস্কটপ ভার্সনের এডঅনস গুলো সহজেই ব্যবহার করেছি। নতুন ভার্সনে Add-ons-এ গেলে মাত্র ৯টা রেকমেন্ডেড এড অন আসে। সিরিয়াসলি, মাত্র ৯টা। আরো এডঅন নিশ্চই যুক্ত হওয়ার কথা দ্রুতই, তবে এখন সম্ভবত ডেস্কটপ আর অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের এড অনস পৃথক হয়ে যাচ্ছে। হয়ত এতে ভবিষ্যতের এড অনস আরো অ্যান্ড্রয়েড ফ্রেন্ডলি হবে, তবে আমার কাছে এটা মোটেও ভালো লাগেনি। Universel Bypass একটা এডঅন ইউজ করতাম, এখন আর চলে না -.-।

যেহেতু কোন জেসচার নেই, ট্যাব সুইচ করতে হলে ট্যাব মেনুতে যেতে হয়। গুগল ক্রোমের মত ট্যাপ করে ধরে রেখে অন্য ট্যাবে সুইচ করা যায় না, একবার ট্যাব মেনু, একবার কাঙ্ক্ষিত ট্যাব মানে দুবার ট্যাপ করা লাগে। এই ভার্সনে তা সেম তো থাকছেই, সাথে নিচের দিকে নামিয়ে আনা হয়েছে, ফলে আরো সময় বেশি লাগছে।

ফরোয়ার্ড বাটনের জন্য মেনুতে যাওয়া লাগে। মেনুতে এবার এনিমেশন যোগ হয়েছে, দেখতে সুন্দর হলেও এটা মোটেও কনভিনিয়েন্ট না। যদিও এটা বড় কিছু না, এর ফলে সামান্য হলেও মেনুতে যেতে সময় বেশি লাগে।

আগে নেট কানেকশন না থাকলে এনাবল ওয়াইফাই অপশন আসতো, নোটিফিকেশন প্যানেলে যাওয়া লাগতো না। এখন আসে না, খালি নিচের মত Reload বাটন আসে। ছোটখাট আরেকটি ডাউনগ্রেড।

এই ভার্সনে একটা হিউজ পরিবর্তন এসেছে। ভালো কিছুও তার মধ্যে অবশ্যই আছে। নতুন ইউআই বেশ ভালো লাগার মত, একটা সুন্দর ডার্ক মোডও আছে। কালেকশন ফিচার যুক্ত হয়েছে যার মাধ্যমে অনেকগুলো ট্যাব কালেকশন হিসেবে রেখে দেওয়া যায় এবং সিঙ্গেল ট্যাবে হোমপেজ থেকে একসাথে ওপেন করা যায়। ন্যাভিগেশন বার এখন নিচেও আনা যায়, তবে আমার জন্য ওপরেই ঠিক আছে।

বলা হয়েছে এখানে Picture-in-Picture মোড যোগ হয়েছে, কিন্তু আমি হালকা করে খুঁজে এই অপশনটা খুঁজে পাইলাম না, হ্যারিকেন না থাকায় হ্যারিকেন জ্বালিয়ে খুঁজে দেখতে পারিনি। আন্ডার দা হুড আরো পরিবর্তন আছে, আগের থেকে পারফর্মেন্স ইম্প্রুভড, আরো ফাস্টার বলা হচ্ছে, ইন্টারনেটের গতি যেহেতু ধ্রুব বিষয় না, তাই কতটা ফাস্ট আমি অনিশ্চিত। GeckoView ইঞ্জিন ব্যবহার হয়েছে।

নতুন কিছু উন্নত ফিচার থাকলেও ওভারঅল ইউসেজ এক্সপেরিয়েন্স এক কথায় বাজে। আমি জাস্ট এতটা ডাউনগ্রেড কোনভাবেই আশা করিনি। যেহেতু অনেক কিছু রিডিজাইন করা হয়েছে এই ভার্সনে, তাই নতুনত্বের পূর্ণতা পেতে হয়ত আর খানিকটা সময় লাগতে পারে। আশা করছি নতুন ডিজাইন ল্যাঙ্গুয়েজের সাথে আগের মত ফাংশনালিটি এবং আরো নতুন ও মডার্ন ফিচারগুলো যুক্ত হবে পরবর্তী ভার্সনগুলোতে। আমি দেখতে চাই সামনের ভার্সনগুলোতে কি ফায়ারফক্স কী করে। যদি ফাংশনালিটি ইম্প্রুভ না হয়, অদূর ভবিষ্যতে অন্য কোন ব্রাউজারে চলে যেতে হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *