টেলিগ্রাম: একটি মেসেজিং অ্যাপ থেকে বেশি কিছু

মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে বিভিন্ন নামের সাথে আমরা পরিচিত, যেমন- মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, ইমো এবং আরো অনেক। তবে টেলিগ্রাম অনেক দিক থেকেই আর সবার থেকে নিজেকে একটা অনন্য অবস্থানে রাখে, এটা শুধুই একটা মেসেজিং অ্যাপ থেকে বেশি কিছু। টেলিগ্রাম মোবাইল, ট্যাবলেট কিংবা ল্যাপটপ – সব ডিভাইসেই ব্যবহার করা যায়, এবং এর একাধিক ওয়েব ভার্সন আছে। টেলিগ্রামের ক্লায়েন্ট-সাইড ওপেনসোর্স, তবে সার্ভার-সাইড নয়।

টেলিগ্রাম একটি প্রাইভেসি ফোকাসড মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে। টেলিগ্রামের ক্লাউডভিত্তিক সুবিধার কারণে এর মেসেজগুলো বাই ডিফল্ট ক্লায়েন্ট-টু-ক্লায়েন্ট এনক্রিপশনের পরিবর্তে ক্লায়েন্ট-সার্ভার-ক্লায়েন্ট এনক্রিপশন ব্যবহার করে এবং এর সার্ভার সাইড ওপেন সোর্স না হওয়াসহ এধরণের কিছু কারণে প্রাইভেসির দিক থেকে টেলিগ্রাম থেকে সিগনাল-সহ কিছু বেটার অপশন যদিও রয়েছে, তবে আর সবকিছুর সাথে মিলিয়ে প্রাইভেট মেসেজিং অ্যাপের মধ্যে টেলিগ্রাম অনন্য।

আর সব মেসেজিং অ্যাপের মত টেলিগ্রামেও আপনি মেসেজ, ছবি-ভিডিও আদানপ্রদান করতে পারবেন। পাশাপাশি রয়েছে অডিও ও ভিডিও কল ফিচার। তবে সাথে রয়েছে এমন কিছু ফিচার এসে টেলিগ্রাম আর সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে তোলে।

টেলিগ্রামে ওয়ান-টু-ওয়ান মেসেজিংয়ের পাশাপাশি চ্যানেল ও গ্রুপ তৈরি করা যায়। টেলিগ্রাম চ্যানেল অনেকটা ফেসবুক পেজের সাথে তুলনীয়, যেখানে সাবস্ক্রাইবারদের কাছে মেসেজগুলো পৌঁছে যায় এবং অপশনালি সাবস্ক্রাইবারদের রিয়েকশন ও কমেন্ট অফার করা যায়। টেলিগ্রাম গ্রুপের আইডিয়া খানিকটা মেসেঞ্জার গ্রুপের মত হলেও ফিচারের দিক থেকে এটি অনেক এগিয়ে।

টেলিগ্রাম চ্যানেল ও গ্রুপে লাইভ স্ট্রিমিং/ভিডিও চ্যাট ফিচার আছে, যা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মত কাজ করে। এখানে একই সাথে ক্যামেরা ও স্ক্রিন শেয়ার চালু রাখা যায়, OBS-সহ থার্ড পার্টি অ্যাপগুলোর সাথে ব্যবহারের সুযোগ আছে। কলে পার্টিসিপেট সংখ্যার কোন লিমিট নেই, তবে একসাথে সর্বোচ্চ ৩০ জন ভিডিও ও স্ক্রিন চালু রাখতে পারে এবং ভিডিও কল রেকর্ড করে রাখার সুযোগ আছে।

টেলিগ্রামে অনেক বড় ফাইল আদান-প্রদান করা যায়, যা মেসেজিংয়ের সাথে ফাইল শেয়ারিং ও ক্লাউড ব্যাকআপ প্লাটফর্ম হিসেবে টেলিগ্রামকে জনপ্রিয় করেছে। প্রতিটি ফাইলের জন্য ২ জিবি পর্যন্ত সাইজ লিমিট থাকলেও ফাইল সংখ্যা ও টোটাল স্টোরেজের কোন ধরাবাঁধা সীমা নেই।

টেলিগ্রামের একটি অন্যতম ফিচার হলো বট। টেলিগ্রাম বট তৈরিতে HTML5, Javascript-এর মত প্রযুক্তি ব্যবহারযোগ্য, সাথে ওয়েব সার্ভিস, পেমেন্ট মেথড ইন্টিগ্রেশন প্রভৃতি সুবিধা যুক্ত করা সম্ভব, যা ডেভেলোপারদের অনেক পাওয়ারফুল ও বৈচিত্রপূর্ণ বট তৈরির রাস্তা খুলে দেয়। যেমন- ফিড রিডার বট, জিমেইল বট, কুইজ বট সহ বিভিন্ন রকম কাজের (ও আকাজের) বট টেলিগ্রামে রয়েছে।

টেলিগ্রামের একটা ফিচার হলো উভয়পক্ষের দিক থেকে মেসেজ ডিলিট করতে পারা। মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে আনসেন্ড ফিচারে কোন একটি মেসেজ রিমুভ করলে তার চিহ্ন প্রকাশিত থাকে, তবে টেলিগ্রামে মেসেজ কোন ট্রেস না রেখে মুছে ফেলা যায়।

আরো অসাধারণ সব ফিচার টেলিগ্রাম অফার করে, যা এক্সপ্লোর করতে সেরা উপায় হলো টেলিগ্রাম ব্যবহার করা। টেলিগ্রাম ইন্সটল করতে: অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | পিসি/মোবাইল/ওয়েব অ্যাপ

নিয়নবাতির সাথে টেলিগ্রামে যুক্ত হতে-

নিয়নবাতি টেলিগ্রাম চ্যানেল
নিয়নবাতি টেলিগ্রাম গ্রুপ

প্রথম প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর, ২০২০ | সর্বশেষ আপডেট: ১৮ মে, ২০২২ | লেখা: শাহরিয়ার নাজিম রিফাত | সম্পাদনা: তাহমিদ হাসান মুত্তাকী

3 Comments

  1. দিনে দিনে আপনাদের কন্টেন্ট আমার অনেক উপকার করছে। এগিয়ে যাক আরও অনেকের মাঝে আমাদের প্রিয় নিয়ন বাতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *